সিনেমা’র গল্পকেও হার মানাবে: আয়েশাকে পটি’য়ে যেভাবে বিয়ে করেছিলেন তামিম

ইদানীং টেলিভিশন খুললেই একটা বিজ্ঞাপন খুব চোখে পড়ছে-তামিমের পটানোবি’ষয়ক বিজ্ঞাপন।তামিম কখনো বোলার, কখনো আম্পায়ার, কখনো রোদ্দুর, কখনো আরও কাকে কাকে যেন পটাচ্ছেন!তা হয়তো আম্পায়ার, বোলার বা সম’র্থকদের পটাতেও পারেন তামিম ইকবাল। কিন্তু একটা ব্যাপার বিশ্বা’স করুন ভাই, পটানো বলতে প্রথমেই যেটা মা’থায় আসে, সেই বান্ধবী পটানোর ব্যাপারে তামিম একেবারে শুরু থেকেই বড় আনাড়ি। আসলে আনাড়ি না বলে, বলা ভালো সে চে’ষ্টাও খুব একটা করেননি চট্টগ্রামের খানবাড়ির এই যুবরাজ! কেন করেননি? কারণ, সেটা দরকারই হয়নি। কারণ, অন্যদের পটাবেন কখন? পুরো কৈশোর তো গেছে একজনকে পটাতে পটাতে। ঠিক, ঠিক ধরে ফেলেছেন-আয়েশা সিদ্দিকা।হ্যাঁ, সারা জীবন এই একজনকেই পটাতে পটাতে কে’টে গেল তামিমের।

চট্টগ্রামের বনেদি পরিবারগু’লোর এমনিতেই বিয়ের মতো অনুষ্ঠানে জাঁকজমক করার একটা রেওয়াজ আছে।তার ওপর তামিমের ব্যাপারটা আবার একটু আলাদা। এই পরিবারের আদ্যোপান্ত তারকার ছড়াছড়ি। একেবারে সোজাসা’পটা তিন টেস্ট ক্রিকেটার তার পরিবারে-আইসিসি ট্রফিজয়ী অধিনায়ক আকরাম খান, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের নায়ক টেস্ট সেঞ্চু’রিয়ান নাফীস ইকবাল খান এবং উইজেডেনের বর্ষসেরা তামিম ইকবাল খান। টেস্টের আঙিনা ছেড়ে আরেকটু ভেতরে খোঁজ’খবর নিন। তামিমের বাবা ইকবাল খান নিজে তুখোড় ফুটবল ও টেনিস খেলোয়াড় ছিলেন, ক্রীড়া সংগঠক ছিলেন; বলা হয় খান পরিবারকে ক্রীড়া পরিবারে পরিণত করার স্বপ্নদ্র’ষ্টাও ছিলেন সেই মানুষটি।

এরপর আকরাম খান ছাড়াও তামিমের বাকি চাচারা সবাই দেশের শীর্ষ পর্যায়েই ক্রিকেট খেলেছেন। তামিমের মা জে’লা ক্রীড়া সংস্থার বিশি’ষ্ট সংগঠক, তামিমের ফুফা সিরাজউদ্দিন আলমগীর বিসিবির সাবেক পরিচালক ও শীর্ষ সংগঠকদের একজন! এমন পরিবারের ছোট ছে’লের বিয়ে সারা দেশ জানবে না তা কী’ হয়: হ্যাঁ, সারা দেশকে জানিয়ে প্রায় এক স’প্ত াহ ধরে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় এসে শেষ হয়েছে সেই বিয়ের অনুষ্ঠান। অবশেষে মহাধুমধাম করে দীর্ঘদিনের প্রে’মিকা আয়েশা ঘরনি হয়েছেন। আম’রা বরং আয়েশার এই ‘পটা’র গল্পটার খোঁজ’খবর করে আসি।তামিম ছিলেন তখন সানশাইন গ্রামা’র স্কুল অ্যান্ড কলেজের ‘এ’ লেভেলের ছাত্র। আয়েশা ওই একই প্রতিষ্ঠানের ছা’ত্রী। হঠাৎ একদিন কী’ করে যেন তামিমের চোখে পড়ে গেলেন আয়েশা। তারপর সিনেমায় যা হয় আর কী’!

তামিমের জীবনের তখন ধ্যানজ্ঞানই হয়ে দাঁড়াল এই আয়েশাকে পটানো। কিন্তু জীবন তো আর সিনেমা নয়। চাইলেই পটিয়ে ফেলা যায় না। প্রথম প্রথম ইশারা-ইঙ্গিতে চে’ষ্টা করলেন; কাজ হয় না। এরপর আয়েশার এক বান্ধবীকে দিয়ে প্রস্তাব পাঠানো; এটা চিরায়ত উপায়। কিন্তু এতেও কাজ হলো না। অবশেষে তামিম ঠিক করলেন, আর ডিফেন্স করে লাভ নেই। হোক পেস বোলিং, এবার সামনে বেড়ে তুলে মা’রতে হবে। এগিয়ে গেলেন। সোজা হেঁটে গিয়ে বললেন, ‘আই লাভ ইউ।’টি-টোয়েন্টির যুগ। এতে নাকি কাজ হয়ে যায়। কিসের কী’!কাজের ‘ক’-ও হলো না। একেবারে শোনামাত্র প্রস্তাব খারিজ করে দিলেন আয়েশা। ঠিক কী’ বলে খারিজ করেছিলেন, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক বিতর্ক আছে। তবে কেউ কেউ বলে, আয়েশা নাকি বলেছিলেন, ‘আই হেইট দিস ওয়ার্ড-লাভ!’

ও, মা! তাহলে কী’ভাবে হবে? আপনি কি জানেন, তামিম মা’রকা’টারি ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি মাঝে মাঝে স্পিন করেন? স্পিনারদের মা’থায় বলের মতোই বাঁক নেওয়া কিছু বু’দ্ধি থাকে। এবার তামিম পার্টটাইম স্পিনার বু’দ্ধিটা কাজে লাগালেন। বিনয়ের সঙ্গে প্রস্তাব দিলেন, আচ্ছা প্রে’ম করে কাজ নেই! ওটা ভালো কথা না। ওর চেয়ে আম’রা বন্ধু হিসেবেই থাকি।হ্যাঁ, এটা ভালো প্রস্তাব। এমন নিরীহ প্রস্তাবে আর ‘না’ করলেন না আয়েশা। আর যায় কোথায়! যে লোক অ্যান্ডারসন, ব্রেসনান, টিনো বেস্টদের ঘু’ম হারাম করে দিতে পারেন;তার সঙ্গে থেকে থেকে ভালোবাসবেন না, যাব’েন কোথায়। আয়েশা টেরও পেলেন না, কবে তামিমের পার্টটাইম স্পিনে কাবু হয়ে গেছেন তিনি।আয়েশা কাবু হলেন, তামিম আগে থেকেই পড়ে ছিলেন; অ’তএব শুরু হয়ে গেল ভালোবাসা, প্রে’ম এবং ভালোবাসা।

আহা, যা ভাবছেন তা নয়। সিনেমা আভি বি বাকি হ্যায়… চট্টগ্রামের দুই সম্ভ্রা’ন্ত রক্ষণশীল পরিবারের ছেয়েমে’য়ে রাস্তায় ড্যাং ড্যাং করে হাত ধরে প্রে’ম করে বেড়াবে, সে কল্পনারও সুযোগ নেই। একবার প্রে’ম শুরু হয়ে গেলে শুরু হলো আসল যন্ত্র’ণা। স্কুলের দারোয়ান, বাসার পাহারাদার, অ’ভিভাবকদের লাল লাল চোখ ফাঁ’কি দিয়ে দেখাই করা দায়। প্রে’ম হবে কী’ করে? ভাগ্যিস তত দিনে মোবাইল এসে গেছে দেশে; নইলে আরেকটা লাইলি-মজনু লিখতে ‘হতো কি না, কে জানে। মোবাইলে আবার বেশি কথা বলার উপায় নেই। তাহলে ধ’রা পড়ে যাব’ে। তাই ছোট ছোট টেক্সট মেসেজ পাঠিয়ে চলে প্রে’ম। আর ফাঁ’কে ফুসরতে একবার চোখের দেখা মিললেই যেন আকাশ হাতে মেলে। এর মধ্যে আয়েশা একবার বাসায় টেক্সট পাঠালে ধ’রা পড়ে কেলেঙ্কারিও নাকি ‘হতে বসেছিল।

সমস্যাটা দিনকে দিন আয়েশার তরফেই বাড়তে থাকল। তামিম ওপেনার মানুষ তো; মাকে বলে আগেই প্রে’মের জানাজানির সূচনাটা করে রেখেছিলেন। তামিমের মা’ও খুব সেকেলে মানুষ নন। তাই মেনেই নিয়েছিলেন ব্যাপারটা। কিন্তু আয়েশার হলো ঝামেলা, বাড়ি বলতেও পারেন না, সইতেও পারেন না। আ’ত্মীয়-স্বজনরা যা গিফট দেয় লুকিয়ে তামিমকে পাঠিয়ে দেন, আর গু’’ম’রে ফেরেন।এর মধ্যে আয়েশাকে মুক্তি দিল মালয়েশিয়া। কুয়ালালামপুরের একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চলে গেলেন আয়েশা। ব্যস! তামিমের পৃথিবীতে প্রিয় শহর হয়ে গেল কুয়ালালামপুর, প্রিয় পরদেশ মালয়েশিয়া, প্রিয় বিমান মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনস!তত দিনে তামিম জাতীয় দলের তারকা। সিরিজের মাঝে মাঝেই ছুটি পান। ছুটি পেয়েই সো করে চলে যান মালয়েশিয়া। আম’রা যারা ক্রীড়া সাংবাদিকতা করি, তত দিনে জেনে ফেলেছি।

কিন্তু পত্রিকায় লেখার উপায় নেই। কারণ, তামিমের এই মালয়েশিয়া অ’ভিসারের তাহলে কপালে দুঃখ আছে।দেশে যতই বাধা থাক, মালয়েশিয়াই আসলে প্রথম সিনেমা’র মতো প্রে’ম জমল। রেস্টুরেন্ট, সিনেমা, বেড়ানো; এসব না হলে আর কিসের প্রে’ম। আর এই সবই হলো মালয়েশিয়ায়। কিন্তু এভাবে আর কত দিন? নাহ। আর বেশি চেপে রাখলেন না তামিমের মা। বুঝলেন ছে’লে বড় হয়েছে, মে’য়েও যোগ্য; তাহলে আর কিসের বাধা। তিনি মা’থা নাড়াতেই কর্মযজ্ঞে ঝাঁপিয়ে পড়লেন আকরাম খান, নাফীস ইকবাল, সিরাজউদ্দিন আলমগীররা। শুরু হয়ে গেল বিয়ের মহাযজ্ঞ।তারপর? তারপরের গল্প তামিম আর আয়েশার কাছ থেকেই শুনে নেবেন না হয়। শুধু তামিম মাঝে একদিন গো’পনে বলার মতো করে বলছিলেন, ‘সে জীবনে আর এই জীবনে একটা বড় পার্থক্য আছে, শুনবেন? এখন আর ওর সঙ্গে লুকিয়ে দেখা

আরো পড়ুন

শিশু প্রতিবন্ধী হয়ে জন্মগ্রহণ করে বাবা মায়ের কিছু ভুলের কারণে

বাবা মায়ের সামান্য একটু ভুলের কারণে তার সন্তানকে আজীবনের জন্য কষ্ট করতে হয় এবং নিন্দা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *